প্রথম ধাপঃ (অনলাইনে আবেদন)
প্রথমেই আপনি https://epassport.gov.bd/landing এ গিয়ে, ‘Apply Online’ এ ক্লিক করুন। খোলার পর আপনার ই-মেইল সহ সকল প্রকার প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে একটি একাউন্ট খুলুন। তারপর আপনার ই-মেইলে একটি নিশ্চিত করণ (confirmation) মেইল আসবে। মেইলটি ক্লিক করলে ভিতরে একটা লিংক পাওয়া যাবে। লিংকটাতে ক্লিক করলেই আপনার অ্যাকাউন্টটি অ্যাক্টিভ হয়ে যাবে। যদি আপনি ইমেইলটি খুজে না পান তাহলে আপনার জাঙ্ক/স্প্যাম ফোল্ডারে খুজে দেখুন পেয়ে যাবেন। অ্যাকাউন্ট খোলার পর অ্যাপ্লাই ফর নিউ ই-পাসপোর্ট এ ক্লিক দিন। যা যা তথ্য দেওয়ার প্রয়োজন হয় সেগুলো নির্ভুলভাবে দিন। এখন অনেকের প্রশ্ন থাকতে পারে যে এমডির (MD) পর ডট দিবেন নাকি না? আর ডট না দিলে কোন সমস্যা হবে কিনা?
এটার উত্তর হল, ডট না দেওয়াই ভাল কারন দিলেও অক্ষর বাদে অন্ন কোন কিছুই প্রিন্ট হবে না। সুতরাং কোন সমস্যা নেই।
এছারাও, স্থায়ী ঠিকানা ঠিক মত দিবেন আর ভাড়া বাসায় থাকলে সেই ঠিকানা স্থায়ী ঠিকানা হিসেবে দিবেন না। নিজের কেনা ফ্লাট বা বিল্ডিং হলে দিতে পারবেন কিন্তু সেই ক্ষেত্রে আপনার দলিলের ফটোকপি চাইবে। দলিলের কাগজ না করা থাকলে সেটা স্থায়ী ঠিকানা হিসেবে দিতে পারবেন না।আবেদনের শেষ ধাপ হিসেবে আপনাকে উল্লেখ করতে হবে আপনি কোন ধরনের পাসপোর্ট করবেন।
কিভাবে পেমেন্ট করতে চান সেটি উল্লেখ করে দিতে হবে। অনেক সময় অনলাইন (বিকাশ) এর মাধ্যম বন্ধ থাকতে পারে। সেই ক্ষেত্রে আপনাকে অফলাইনের মাধ্যমে করতে হবে। সব তথ্য ঠিক মত দেয়ার পর সাবমিট করে দিবেন। সাবমিট করলে ‘confirmation’ মেইল আসবে। আসলে বুঝবেন আপনার অ্যাপ্লিকেশন সফল, তখন অ্যাপ্লিকেশন ফর্মটি ডাউনলোড করে রাখুন।
ধরন | মেয়াদ (বছর) | খরচ | কার্জ দিবস | পেইজ |
---|---|---|---|---|
রেগুলার | ৫ | ৳ ৪,০২৫ | ২১ | ৪৮ |
রেগুলার | ১০ | ৳ ৫,৭৫০ | ২১ | ৪৮ |
রেগুলার | ৫ | ৳ ৬,৩২৫ | ২১ | ৬৪ |
রেগুলার | ১০ | ৳ ৮,০৫০ | ২১ | ৬৪ |
এক্সপ্রেস | ৫ | ৳ ৬,৩২৫ | ১০ | ৪৮ |
এক্সপ্রেস | ১০ | ৳ ৮,০৫০ | ১০ | ৪৮ |
এক্সপ্রেস | ৫ | ৳ ৮,৬২৫ | ১০ | ৬৪ |
এক্সপ্রেস | ১০ | ৳ ১০,৩৫০ | ১০ | ৬৪ |
সুপার এক্সপ্রেস | ৫ | ৳ ৮,৬২৫ | ২ | ৪৮ |
সুপার এক্সপ্রেস | ১০ | ৳ ১০,৩৫০ | ২ | ৪৮ |
সুপার এক্সপ্রেস | ৫ | ৳ ১২,০৭৫ | ২ | ৬৪ |
সুপার এক্সপ্রেস | ১০ | ৳ ১৩,৮০০ | ২ | ৬৪ |
দ্বিতীয় ধাপঃ (অ্যাপয়েন্টমেন্ট তারিখ ঠিক করুন)
আপনি মন মত যে কোন একটি খালি স্লটে আপনার অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিতে পারবেন।
তৃতীয় ধাপঃ (পেমেন্ট)
অফলাইন বাছাই করে থাকলে, নির্ধারিত যে কোন ব্যাংকে গিয়ে টাকা পরিষদ করে দিলেই হবে। যেসমস্থ ব্যাংক পেমেন্ট গ্রহন করেঃ ওয়ান ব্যাংক, প্রিমিয়ার ব্যাংক, সোনালী ব্যাংক, ট্রাষ্ট ব্যাংক, ব্যাংক এশিয়া, ঢাকা ব্যাংক। ব্যাংকে গেলে আপনার নাম চাইবে শুধু। আপনার আগের পাসপোর্টে দেওয়া হুবুহু নামটি দিবেন। কিছু কিছু ক্ষেত্রে এনআইডি এবং অ্যাপ্লিকেশন এর কপি দেখতে চায়, তাই এক কপি সাথে নিয়ে যাওয়া ভালো।পেমেন্ট করার পরে ব্যাংক থেকে পেইমেন্ট রিসিট দিবে, রিসিটটি যত্ন করে রাখবেন।
চতুর্থ ধাপঃ (অ্যাপয়েন্টমেন্টের দিন –পাসপোর্ট অ্যাপ্লিকেশন জমা )
নিচের ডকুমেন্টগুলো নিয়ে যাবেনঃ
- পাসপোর্ট ফর্মের প্রিন্টেড কপি (ডাবল সাইড প্রিন্ট)
- অ্যাপয়েন্টমেন্ট কপি
- এনআইডি এবং এনআইডি এর ফটোকপি
- বিদুত/গ্যাস/পানির বিলের ফটোকপি
- শিক্ষার্থী আইডি কার্ড এর ফটোকপি (শিক্ষার্থীদের জন্য)
- ব্যবসার দলিল (ব্যবসায়ীদের জন্য)
- অফিস আইডি কার্ড কপি এবং আনুশাঙ্গিক কাগজ পত্র (জব করেন যারা তাদের জন্য)
- নিকাহ নামার দলিল (বিবাহিতদের জন্য)
আগারগাও থেকে আরপিও এর জন্যঃ
আপনি ৩০৮ নম্বর কক্ষে যাবেন উপযুক্ত কাগজ গুলো নিয়ে, অ্যাপ্লিকেশন ফর্ম দেখে সেখান থেকে একটা সিল এবং সিরিয়াল লিখে দেবে ওখানকার লোক। ৪০১ নম্বর কক্ষে ৩০৮ নম্বর কক্ষ থেকে দেয়া সিরিয়াল অনুযায়ী আপনাকে প্রবেশ করানো হবে। এই কক্ষে আপনার ডকুমেন্টস সব ঠিক আছে কিনা চেক করা হবে তাই অনলাইনে অ্যাপ্লিকেশন সাবমিটে কোন ভুল হয়ে থাকলে এখানে বলে নিবেন। তারা মার্ক করে দিবে আপনার ফর্মে। চেক শেষে তারা একটা সিল সাইন করে দিবে। সাধারনত ৪০৩ নম্বর কক্ষ পুরুষ এবং ৪০৪/৪০৫ নম্বর কক্ষ মহিলা ও শিশুদের বায়োমেট্রিকস করানো হয়। ৪০১ নম্বর কক্ষ থেকে সিল দেয়ার পর এই কক্ষে আপনার ডকুমেন্ট রিচেক করা হবে, ডকুমেন্ট স্ক্যান করা হবে এবং কোন সংশোধন থাকলে সংশোধ করে দেওয়া হবে।
বায়োমেট্রিকসে যা নেয়া হবেঃ
- দুই হাতের দশ আঙুলের ছাপ
- চোখের স্ক্যান
- ডিজিটাল স্বাক্ষর
কাজ শেষ হলে আপনাকে ডেলিভারি স্লিপ দিয়ে দিবে।
পঞ্চম ধাপঃ (পুলিশ ভেরিফিকেশন)
পুলিশ বাসায় আসতে পারে অথবা থানাও ডাকতে পারে। যদি থানায় ডাকে, শিক্ষার্থী হলে পিতাকে সাথে নিয়ে যেতে হবে। কারন ওনারও একটা স্বাক্ষরের দরকার হবে।
যেসব ডকুমেন্টস সাথে রাখতে হবেঃ
- এনআইডি কপি
- শিক্ষার্থী আইডি কপি
- এসএসসি সার্টিফিকেট
- পিতার এনআইডি কপি
- মাতার এনআইডি কপি
- ইউটিলিটি বিল কপি
- স্থায়ী ঠিকানা ঢাকা হলে, জমি/ফ্লাটের দলিলের কপি।
বিদ্রোহ: পুলিশ সম্ভবত চা নাশতার জন্য ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা নিতে পারে। যদি কোন ভুল থাকে পরিমাণ আরও কয়েকগুণ বাড়বে।
ষষ্ঠ ধাপ: (পাসপোর্ট ডেলিভারি)
পুলিশ ভেরিফিকেশনের কিছুদিন পর অ্যাপ্লিকেশন স্ট্যাটাস, ‘এনরোলমেন্ট অ্যাপ্রভাল’ থেকে ‘এনরোলমেন্ট অ্যাপ্রভড’ হবে এবং তার সাথে পাসপোর্ট তৈরি এর কাজ শুরু হয়ে যাবে। এনরোলমেন্ট অ্যাপ্রভড স্ট্যাটাস এর কিছুদিন পর স্ট্যাটাস হবে পাসপোর্ট শিপড। পাসপোর্ট শিপড এর ১ থেকে ২ দিন পর এসএমএস, ইমেইল এবং স্ট্যাটাস হবে ই-পাসপোর্ট ইস রেডি ফর ইশুএন্স। তখন পাসপোর্ট আনতে আরপিও তে যেতে হবে। আপনি যাওয়ার সময় সাথে ডেলিভারি স্লিপ এবং এনআইডি এর কপি নিয়ে যাবেন। আপনার সিরিয়াল আসলেই ৩০১ নম্বর কক্ষের বামপাশের কক্ষে ফিঙ্গারস ক্যান দিয়ে ই-পাসপোর্ট নিয়ে আসবেন। ব্যাস শেষ, আপনি পেয়েগেলেন আপনার নতুন ই-পাসপোর্ট।
কিছু উপদেশঃ
- দালাল থেকে দূরে থাকুন!
- কোনো শাদা/হাল্কা রঙের জামা পরিধন করবেন না ডিজিটাল বায়োমেট্রিকসের দিন!
- কিছু জানার প্রয়োজন হলে হেল্প ডেস্কে জিজ্ঞেস করুন অথবা আশেপাশের মানুষকে জিজ্ঞাস করুন।
- স্থায়ী ঠিকানা যাতে ভুল না হয় সেটি খেয়াল রাখবেন!
- যা যা ডকুমেন্ট দরকার সেগুলো সবসময় আপনার সাথে রাখবেন।
মন্তব্য করুন